কারাফটকে ধর্ষণ মামলার আসামির বিয়ে!
ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিকে মুক্ত করে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কারাফটকে বিয়ের আয়োজন করতে রাজশাহী কারা তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) আসামির করা জামিন আবেদনের শুনানির সময় হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদালত উভয়পক্ষের সম্মতিতে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার পর এ মাসের মধ্যে লিখিতভাবে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। আদালতে ভুক্তভোগীর পক্ষে জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আদেশের বিষয়টি সারওয়ার হোসেন বাপ্পী সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। আইনজীবী জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার সিতানাথ খালকোর ছেলে দিলীপ খালকোর সঙ্গে তার খালাতো বোনের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। এরই সূত্র ধরে ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শারীরিক সম্পর্ক করে দিলীপ খালকো। এতে ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু এরপর থেকে দিলীপ খালকো আর বিয়ে করতে রাজি হননি। এ নিয়ে সালিশ করা নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়। শেষ পর্যন্ত সালিশ বৈঠক না হওয়ায় ভুক্তভোগী ওই বছরের ২৩ অক্টোবর স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে হাজির হয়ে তার প্রেগন্যান্সি পরীক্ষা করেন। এরপর ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ি থানায় হাজির হয়ে দিলীপ খালকোর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন তিনি। এ মামলার আসামির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর বিচার শেষে ওই বছরের ১২ জুন এক রায়ে দিলীফ খালকোকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। ২০১২ সালের রায়ের পর থেকে দিলীপ কারাবন্দি। পরে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন তিনি। বৃহস্পতিবার জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে তার আইনজীবী জানান, ভুক্তভোগী এখানে আছেন। তারা বিয়ে করতে সম্মত হয়েছেন। জামিন পেলে তাদের বিয়ে হবে। এ অবস্থায় আদালত কারাগারের গেটেই বিয়ের আয়োজন করতে কারা তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দিয়েছেন।